বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২

মেসির পছন্দের গোলের শিল্পকর্ম নিলামে ২২ কোটি টাকায় বিক্রি

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২৩, ২০২৫, ০৭:০৮ পিএম

মেসির পছন্দের গোলের শিল্পকর্ম নিলামে ২২ কোটি টাকায় বিক্রি

ছবি- সংগৃহীত

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহারে ছবি অঙ্কনের জন্য পরিচিত তুর্কি বংশোদ্ভূত আমেরিকান শিল্পী রেফিক আনাদোল এবার বিশ্বখ্যাত ফুটবলার লিওনেল মেসির পছন্দের গোল অবলম্বনে একটি অসাধারণ ডিজিটাল শিল্পকর্ম তৈরি করে চমক সৃষ্টি করেছেন। ‘অ্যা গোল ইন লাইফ: মেসি x রেফিক আনাদোল’ নামের এই শিল্পকর্মটি ব্রিটেনের নিলাম প্রতিষ্ঠান ‘ক্রিস্টিস’-এর নিলামে গতকাল ১৮ লাখ ৭০ হাজার ডলারে (প্রায় ২২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা) বিক্রি হয়েছে।

রেফিক আনাদোল, যিনি যুক্তরাষ্ট্রে নিজের নামেই একটি স্টুডিও এবং এআই ব্যবহার করে আঁকা ছবির জাদুঘর ‘ডেটাল্যান্ড’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা, কয়েক সপ্তাহ সময় নিয়ে বিভিন্ন যন্ত্র ও এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে মেসির পছন্দের গোলটির ত্রিমাত্রিক রূপ দেন। এই গোলটি ছিল ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের, যেখানে রোমের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে মেসি হেডে গোল করেছিলেন। ম্যাচের ৭০ মিনিটে জাভি হার্নান্দেজের ক্রস থেকে ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার মেসি লাফিয়ে ৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার ইউনাইটেড ডিফেন্ডার রিও ফার্ডিনান্ডের চেয়েও বেশি উচ্চতায় উঠে হেডে গোলটি করেছিলেন—এমনকি তার পা থেকে বুটও খসে গিয়েছিল।

নিলামের আগে ‘দ্য অ্যাথলেটিক’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আনাদোল জানান, তার ইচ্ছা হলো এই শিল্পকর্ম যেন কোনো ব্যক্তির সংগ্রহশালাতে শুধু পড়ে না থাকে। আনাদোলের যুক্তি, "এটা শুধু দুজন ব্যক্তির মাঝে সংযোগ নয়, এটা দুটি বিভাগের মাঝে সংলাপও। শিল্পীর সঙ্গে শিল্পীর সাক্ষাৎ নয়, খেলার সঙ্গে শিল্পের সাক্ষাৎ। এ কারণেই এটা এত সতেজ ও শক্তিশালী।"

মেসি নিজেই কয়েক মাস আগে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে (যা এখনো প্রকাশিত হয়নি বলে অ্যাথলেটিক জানিয়েছে) এই গোলটিকে তার পছন্দের গোল হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "(পছন্দের গোল হিসেবে যেকোনো) একটা বেছে নেওয়া কঠিন, কারণ অনেক (গোল) আছে। ওই গোলটি আমার পছন্দের। এটা সবচেয়ে সুন্দর ও অনন্য। কারণ হেডে করেছি, লাফিয়ে অনেক উঁচুতে উঠেছিলাম যেটা আমার ক্ষেত্রে বিরল।"

নিলাম প্রতিষ্ঠান ক্রিস্টিস অবশ্য ক্রেতার নাম প্রকাশ করেনি। তবে ছবি বিক্রির এই বিপুল অঙ্কের টাকা ইন্টার মিয়ামি ফাউন্ডেশনে দান করা হবে। ফাউন্ডেশনটি বিভিন্ন দাতব্য কাজে অর্থ ব্যয় করে থাকে, যার মধ্যে আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, এল সালভাদর, হন্ডুরাস ও হাইতিতে শিক্ষার প্রসারে ইউনিসেফের সঙ্গে যৌথ অংশীদারত্বে বিভিন্ন কর্মসূচি উল্লেখযোগ্য।

নিলামের পর কিউরেটর জিমেনা কামিনোস বলেছেন, "মেসির সবচেয়ে পছন্দের গোল থেকে এমন শিল্পকর্ম তৈরি হবে, সেটা শুধু হাজারো দর্শকদের আনন্দ দেবে না, লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থাকেও এগিয়ে নেবে।"

ক্রিস্টিসের ১০ম আর্ট+টেক সম্মেলনে গত ১২ জুলাই থেকে তাদের নিউইয়র্ক শাখায় এই শিল্পকর্মটি প্রদর্শিত হয়েছে। নিলাম প্রতিষ্ঠানটির ডিজিটাল সেলসের ব্যবস্থাপক সেবাস্তিয়ান সানচেজ জানান, ১৫ লাখ ডলার থেকে এই শিল্পকর্মের দাম হাঁকা শুরু হয়। উল্লেখ্য, ২০২২ বিশ্বকাপে মেসি যে ছয়টি জার্সি পরেছিলেন, সেগুলো গত বছর খেলাধুলায় সবচেয়ে দামি স্মারক হিসেবে ৭৮ লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছিল।