সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৫, ১১:৫৫ এএম
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পোল্ট্রি শিল্প নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, বিশেষ করে তরুণ উদ্যোক্তাদের হাত ধরে। তুলনামূলক কম পুঁজিতে শুরু করে অল্প সময়ে লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকায় পোল্ট্রি ফার্মিংয়ের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখছে হাইলাইন ব্রাউন জাতের মুরগি।
বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে সহজে খাপ খাইয়ে নেওয়া এবং উচ্চ ডিম উৎপাদনের ক্ষমতার কারণে এই জাতটি তরুণ খামারিদের কাছে প্রথম পছন্দ হয়ে উঠেছে।হাইলাইন ব্রাউন একটি শংকর প্রজাতির লেয়ার মুরগি, যা বিশেষভাবে ডিম উৎপাদনের জন্য উন্নত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থী সাকিব ইফতেখার ইসলাম জানান, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই জাতের মুরগি পোল্ট্রি শিল্পে একটি 'গেম-চেঞ্জার' হিসেবে কাজ করছে।
হাইলাইন ব্রাউন মুরগির সুবিধা:
-
উচ্চ ডিম উৎপাদন: হাইলাইন ব্রাউন মুরগি তার ১০০ সপ্তাহের উৎপাদন চক্রে ৪৬৮ থেকে ৪৭৩টি ডিম দিতে পারে, যা বাণিজ্যিক ফার্মিংয়ের জন্য অত্যন্ত লাভজনক। তাদের ডিম উৎপাদনের দক্ষতা সর্বোচ্চ ৯৬ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছায়।
-
কম খাদ্য খরচ: এদের খাদ্য রূপান্তর দক্ষতা ১.৯ থেকে ২.১ এর মধ্যে, যা অন্যান্য লেয়ার জাতের তুলনায় উন্নত। অর্থাৎ, প্রায় ২ কেজি খাদ্য থেকে এরা ১ কেজি ওজন বৃদ্ধি করতে পারে। এটি খরচ কমিয়ে লাভ বাড়াতে সহায়ক।
-
জলবায়ু সহনশীলতা: বাংলাদেশের গরম ও আর্দ্র জলবায়ুর সঙ্গে হাইলাইন ব্রাউন সহজেই মানিয়ে নিতে পারে, যা তাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পালনের জন্য উপযোগী করে তুলেছে।
-
ডিমের গুণগত মান: এই মুরগির ডিমের রং বাদামি, যা বাংলাদেশের বাজারে সাদা ডিমের চেয়ে বেশি জনপ্রিয় এবং ভালো দামে বিক্রি হয়। ডিমের খোসা শক্ত ও টেকসই হওয়ায় পরিবহনের সময় ক্ষতির ঝুঁকি কমে।
চ্যালেঞ্জ এবং সমাধান:
পোল্ট্রি শিল্পে সফল হতে হলে কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়, যেমন খাদ্যের দাম বৃদ্ধি এবং রোগের প্রাদুর্ভাব। এই সমস্যাগুলো মোকাবিলায় তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ নেওয়া, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা এবং বাজার বিশ্লেষণ করে সঠিক পরিকল্পনা করা জরুরি। স্থানীয় পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখলে বাজার সম্পর্কে সঠিক তথ্য ও সহায়তা পাওয়া সহজ হয়।