জুলাই ২৪, ২০২৫, ০৭:৩৫ পিএম
আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলা এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ঘটনা ঘিরে চট্টগ্রামে একসময় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার এবং তার অনুসারীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সংঘর্ষের ঘটনা ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছিল। এই ঘটনার পর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন। আজ তার জামিন আবেদন নিয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা মামলার ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণে প্রভাব ফেলবে।
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলাসহ মোট পাঁচটি মামলায় ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে এক শুনানি শেষে বিচারক হাসানুল ইসলাম এই আদেশ দেন।
জামিন নামঞ্জুর হওয়া মামলাগুলো হলো: আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলা, গত বছরের ২৬ নভেম্বর আদালত অঙ্গণে ভাঙচুর-হামলা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পুলিশের করা তিনটি মামলা, এবং আলিফের ভাই খানে আলমের করা আরেকটি মামলা। এই মামলাগুলো চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে করা গুরুতর অভিযোগের সঙ্গে সম্পর্কিত।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের এপিপি মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী ৫ মামলায় চিন্ময়ের কৃষ্ণ দাসের জামিন নাকচ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আজকের এই জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে আদালত চত্বরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো যায়।
আদালত সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মামলার জামিন শুনানি শুরু হয়। চিন্ময়ের পক্ষে ঢাকা থেকে আসা আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য জামিনের পক্ষে বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এর তীব্র বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের যুক্তি-তর্ক শেষে আদালত পাঁচ মামলাতেই চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুরের আদেশ দেন। শুনানি শেষে আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্যকে কঠোর নিরাপত্তা দিয়ে আদালত থেকে বের করে আনা হয়, যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৩১ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছিল, যেখানে আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়। এরপর ২২ নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরও একটি বড় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রদ্রোহের সেই মামলায় চিন্ময় দাসকে গত ২৫ নভেম্বর ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয়।
পরদিন জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে তাকে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। আদালত চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে সেদিন চট্টগ্রামে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীদের তীব্র সংঘর্ষ বেঁধে যায়। সেই সংঘর্ষের সময়ই আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে আদালত চত্বরের বাইরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে গত ৫ মে চিন্ময় দাসকে এই ৫টি মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর আদেশ দেন আদালত।
আপনার মতামত লিখুন: