শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

শীর্ষ অপরাধীর বিচার দেখতে চাই: জামায়াত আমির

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২৪, ২০২৫, ০৮:৫৭ পিএম

শীর্ষ অপরাধীর বিচার দেখতে চাই: জামায়াত আমির

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং শীর্ষ পর্যায়ের অপরাধীদের দায়মুক্তি প্রায়শই সমালোচিত হয়। দেশের সাধারণ জনগণ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সব সময়ই সুষ্ঠু বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ক্ষমতা পরিবর্তনের সময়গুলিতে অপরাধীদের বিচার নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান তার এক বক্তব্যে এই বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং শীর্ষ অপরাধীদের বিচারের দাবি তুলে ধরেছেন, যা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তাৎপর্যপূর্ণ।

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, তারা বাস্তবিক অর্থে কারও কোনো প্রভুত্ব মানবেন না। তাদের প্রভু একমাত্র আল্লাহ। তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন যে, তারা কারও 'বড় ভাইগিরি' মানবেন না। বরং দেশে সমমর্যাদার ভিত্তিতে সকলের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার উপর জোর দেন।




 

আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেলে সিলেট জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শফিকুর রহমান তার বক্তব্যে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে বলেন, "এখানে প্রতিবেশীরা অগ্রাধিকার পাবেন। কিন্তু কোনো প্রতিবেশী যদি অব্যাহতভাবে আমাদের অধিকার হরণ করতে চান, তাহলে এই দেশের একসাথে ১৮ কোটি মানুষ রুখে দাঁড়াবে।" তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, "আমরা আমাদের অধিকার কারও কাছে বন্ধক রাখব না। আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কেউ নাক গলাক সেটিও আমরা চাইব না। আমরা তাদেরকেও মর্যাদা দেব, আমরাও মর্যাদা চাই। প্রতিবেশীদের সঙ্গে সমমর্যাদার ভিত্তিতে সম্পর্ক গড়তে হবে।"

জামায়াত আমির দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, "যদি মৌলিক সংস্কার না হয় এবং আগের মতো নির্বাচন হয় তবে সেই নির্বাচন জাতির জন্য ব্যথা এবং দুঃখের কারণ হবে। আমরা এটি দেখতে চাই না এবং আমরা এটি হতে দিতেও পারি না।" এজন্য তিনি প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং অপরাধীদের বিচার দাবি করেন।

শীর্ষ অপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, "আমরা জানি এই সময়ের মধ্যে সব বিচার করা সম্ভব নয়। কিন্তু এক্ষেত্রে সরকার ও বিচার বিভাগের আন্তরিকতা দেখতে চাই। আমরা দৃশ্যমান কিছু দেখতে চাই। দুই-চারটা হলেও শীর্ষ অপরাধীর বিচার আমরা দেখতে চাই।" তিনি আরও উল্লেখ করেন, "পরবর্তীতে যারা ক্ষমতায় আসবেন তাদের নৈতিক দায়িত্ব হবে এই বিচারকে চালিয়ে যাওয়া। যদি কেউ ধানাইপানাই করেন, তাহলে মনে রাখবেন যুবকরা কাউকেই ছাড় দেবে না।"

শফিকুর রহমান দেশের যুব সমাজের প্রশংসা করে বলেন, "দেশের যুব সমাজ যখন দাঁড়িয়ে থাকে এই দেশ তখন হারিয়ে যায় না। এই জাতি পথ খুঁজে পায়, মুক্তির পথ। আমরা আমাদের যুব সমাজকে নিয়ে খুবই আশাবাদী।" তিনি যুব সমাজকে অন্তরের মধ্যে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধায় লালন করেন উল্লেখ করে বলেন, "শ্রদ্ধা এই কারণে যে জাতির মুক্তির জন্য আমরাও লড়াই করেছি, কিন্তু ফিনিশিং হয়েছে তাদের হাতে। তারা এই শ্রদ্ধা পাবে, এটি তাদের পাওনা। আমরা সেটি তাদের দিয়ে যাব।"

জামায়াতের আমির তার বক্তব্যে আরও বলেন, "একটা যুদ্ধ হয়েছে ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে। দেশবাসীকে নিয়ে আরেকটা যুদ্ধ হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং এই যুদ্ধেও বাংলাদেশের মানুষের জয় হবে।"

সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। সভায় আরও বক্তব্য দেন সিলেট জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, হবিগঞ্জ জেলা আমির মখলিছুর রহমান, জয়নাল আবেদীন, মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী, মাওলানা লুৎফর রহমান হুমায়দী, জামিল আহমদ রাজু, শামীম আহমদ, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ প্রমুখ।