আগস্ট ১৬, ২০২৫, ১০:১২ এএম
অবৈধভাবে আহরিত সাদা পাথর পাচারের জন্য রুট পরিবর্তন করে সড়কপথের পরিবর্তে নৌপথকে ব্যবহার করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। অভিযোগ উঠেছে, সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা থেকে পাথর লুটকারীরা এখন সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী শিল্পনগরী ছাতককে পাচারের নতুন রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অব্যাহত অভিযানের মুখে সড়কপথে সুবিধা করতে না পেরে এই চক্র এখন নদীপথ ব্যবহার করছে বলে জানা গেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে আমাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জের প্রভাবশালী বালু-পাথর ব্যবসায়ীদের একটি অংশ বর্তমানে ছাতকে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা ভোলাগঞ্জ থেকে নৌপথে বিপুল পরিমাণ পাথর এনে ছাতকের বিভিন্ন এলাকায় গোপনে মজুদ করছে। পরবর্তীতে এসব মজুদকৃত পাথরের সঙ্গে অবৈধভাবে লুট করে আনা সাদা পাথর মিশিয়ে জাহাজ ও নৌকার মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হচ্ছে। এই কার্যক্রম সাধারণত রাতের অন্ধকারে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সংঘটিত হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, ভোলাগঞ্জ থেকে ছাতকে নিয়মিতভাবে নৌকায় করে পাথর আনা হয়। এই চক্রের সদস্যরা বৈধ পাথরের আড়ালে অবৈধ পাথর মিশিয়ে পাচারের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এই অবৈধ বাণিজ্য স্থানীয় অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং সরকারের রাজস্ব হারাচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার অভাব এবং স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের মদদেই এই কার্যক্রম নির্বিঘ্নে চলছে। এই কারণে ছাতক বর্তমানে লুট হওয়া পাথর পাচারের জন্য সবচেয়ে 'নিরাপদ' রুটে পরিণত হয়েছে।
ছাতক থানার ডিউটি অফিসার এসআই মাসুদ মিয়া এ বিষয়ে বলেন, "পাথরগুলো ছাতকে আসার বিষয়ে আমার জানা নেই। কোনো বক্তব্য নিতে হলে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।" তার এই মন্তব্য এই অবৈধ কার্যক্রম সম্পর্কে স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতা বা অজ্ঞতার ইঙ্গিত দেয়।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে এই অবৈধ পাচার কার্যক্রম বন্ধ করা কঠিন হয়ে পড়বে। এই ঘটনা শুধুমাত্র একটি অপরাধমূলক কার্যক্রম নয়, বরং এটি দেশের অর্থনীতির ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে অবিলম্বে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে এবং অবৈধ পাথর উত্তোলন ও পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।