আগস্ট ২৮, ২০২৫, ০১:১৬ পিএম
সাধারণ সর্দি-কাশি এবং যক্ষ্মা (টিবি) রোগের কাশির মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে, যা দ্রুত শনাক্ত করা জরুরি। মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে এই রোগ হয়। এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ, যা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে একজন থেকে আরেকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। তাই লক্ষণগুলো জেনে সচেতন থাকা খুবই প্রয়োজন।
সাধারণত, যক্ষ্মার লক্ষণগুলো নির্ভর করে শরীরের কোন অংশ আক্রান্ত হয়েছে তার ওপর। যেহেতু এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফুসফুসকে আক্রমণ করে, তাই কিছু সাধারণ লক্ষণ দেখা যায়।
যক্ষ্মা রোগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাশি চলতে থাকা। প্রথমে এটি শুকনো কাশি হতে পারে, তবে ধীরে ধীরে এর সঙ্গে শ্লেষ্মা এবং রক্ত মিশে থাকতে পারে।
এছাড়াও, টিবি আক্রান্ত রোগীর মধ্যে কিছু অতিরিক্ত লক্ষণ দেখা যায়, যা সাধারণ কাশির ক্ষেত্রে সাধারণত থাকে না। যেমন:
-
রাতের বেলা অত্যধিক ঘাম হওয়া।
-
শারীরিক ওজন কমে যাওয়া।
-
ক্ষুধামান্দ্য বা খিদে কমে যাওয়া।
-
অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করা।
-
বুকে ব্যথা।
-
দীর্ঘদিন ধরে জ্বর থাকা, যা সাধারণত রাতের দিকে বাড়ে।
অন্যদিকে, সাধারণ কাশির কারণ হলো সাধারণত ভাইরাস সংক্রমণ। এই কাশি কয়েক দিন থেকে এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায়। এর সঙ্গে সাধারণত জ্বর, সর্দি, গলা ব্যথা বা শরীর ম্যাজম্যাজ করার মতো লক্ষণ দেখা যায়। সাধারণ কাশির সঙ্গে রক্ত পড়ার কোনো সম্পর্ক থাকে না।
অনেক সময় যক্ষ্মার ব্যাকটেরিয়া ফুসফুস থেকে শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে, যাকে এক্সট্রা পালমোনারি টিবি বলা হয়। এক্ষেত্রে লক্ষণগুলো ভিন্ন হতে পারে, যেমন:
-
লিম্ফ নোড টিবি: লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া।
-
হাড়ের টিবি: হাড়ে ব্যথা, ফোলা ও বিকৃতি।
-
কিডনির টিবি: প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত পড়া ও কোমরে ব্যথা।
-
মস্তিষ্কের টিবি (মেনিনজাইটিস): মাথাব্যথা, জ্বর, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া এবং চেতনা হ্রাস।
সঠিক সময়ে লক্ষণগুলো চিহ্নিত করে চিকিৎসা গ্রহণ করলে যক্ষ্মা সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। তাই, যদি দীর্ঘ সময় ধরে কাশি থাকে বা উপরোক্ত লক্ষণগুলো দেখা যায়, তবে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।