শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২

TSMC: যে কোম্পানির হাতে বিশ্বের প্রযুক্তি!

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক

আগস্ট ১৫, ২০২৫, ১০:৩৪ এএম

পৃথিবীজুড়ে চলছে প্রযুক্তির এক নিরন্তর বিপ্লব। স্মার্টফোন থেকে শুরু করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মহাকাশ গবেষণা থেকে শুরু করে সামরিক সরঞ্জাম—সবকিছুর কেন্দ্রে রয়েছে একটি ক্ষুদ্র উপাদান, যা চিপ নামে পরিচিত। আর এই চিপ তৈরির নেপথ্যে নীরব ভূমিকা পালন করে চলেছে একটি রহস্যময় কোম্পানি, যার নাম টিএসএমসি। বিশ্বের বৃহত্তম টেক জায়ান্ট—অ্যাপল, স্যামসাং, এনভিডিয়া, বা কোয়ালকম—সবাই তাদের প্রযুক্তির জন্য এই কোম্পানির উপর নির্ভরশীল। আজ আমরা দেখব, মঞ্চের আড়ালে থেকে কীভাবে টিএসএমসি গোটা বিশ্বকে পরিচালনা করছে।

৩৮ বছর আগে তাইওয়ানের এক ছোট্ট শহরে মরিস চ্যাং নামের এক দূরদর্শী মানুষ এই কোম্পানির ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। তখন হয়তো কেউ ভাবতেই পারেনি যে, এটি একদিন বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানিতে পরিণত হবে। টিএসএমসি এমন উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে চিপ তৈরি করে, যা অন্য কোনো কোম্পানি আজও তৈরি করতে পারেনি। এই চিপগুলো এতটাই সূক্ষ্ম যে, এক ইঞ্চি চুলের ভেতরে লাখ লাখ চিপ ঢুকে যেতে পারে। তারা বিভিন্ন ন্যানোমিটারের চিপ তৈরি করে, যার মধ্যে ৩ ন্যানোমিটারের মতো অ্যাডভান্সড চিপও রয়েছে। এই ধরনের প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বই তাদের অ্যাপল, স্যামসাং এবং এনভিডিয়ার মতো শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর প্রধান সরবরাহকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

যদি কোনো কারণে টিএসএমসি হঠাৎ করে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়, তবে গোটা প্রযুক্তি বিশ্ব মুহূর্তের মধ্যে স্থবির হয়ে যাবে। কোনো নতুন গ্যাজেট বাজারে আসবে না, পুরনো ডিভাইসের দাম কয়েকগুণ বেড়ে যাবে, এবং সামরিক গবেষণা ও মহাকাশ মিশনগুলোও থেমে যাবে। টিএসএমসি শুধু একটি কোম্পানি নয়, এটি প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ, যা বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তকে সংযুক্ত করে রেখেছে। এই কোম্পানি প্রমাণ করেছে যে, নীরব উদ্ভাবন এবং নিরলস পরিশ্রম কীভাবে একটি দেশের অর্থনীতি এবং বিশ্বের গতিপথ বদলে দিতে পারে। তাই টিএসএমসি-কে বিশ্বের অর্থনীতির অদৃশ্য নিয়ন্ত্রক বললে অত্যুক্তি হবে না।