শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২

শেখ মুজিবকে ঘিরে বিতর্ক: ইতিহাসে তাঁর স্থান কোথায়?

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ১৫, ২০২৫, ১২:৫১ পিএম

শেখ মুজিবকে ঘিরে বিতর্ক: ইতিহাসে তাঁর স্থান কোথায়?

ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক অবস্থান এখন বিতর্কের কেন্দ্রে। সম্প্রতি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে তার রাজনৈতিক জীবন, শাসনকাল এবং দেশের ইতিহাসে তার ভূমিকা নিয়ে নতুন আলোচনা ও ভিন্ন মত উঠে আসছে। সাবেক ক্ষমতাশীন দলের ১৫ বছরের শাসনামলে শেখ মুজিবকে নিয়ে একমুখী ইতিহাস তৈরির যে প্রচেষ্টা ছিল, বর্তমান প্রেক্ষাপটে তার উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এর ফলে একটি নতুন প্রজন্মের কাছে তার ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

সাবেক সরকারের আমলে প্রতি বছর ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হতো এবং আগস্ট মাস জুড়ে চলত নানা আনুষ্ঠানিকতা। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় সেসব কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। এমনকি ১৫ই আগস্ট পালন করতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক শক্তিও এখন দৃশ্যমান নয়। এই পরিস্থিতির জন্য অনেকেই সাবেক ক্ষমতাশীল দলের দীর্ঘ শাসনের সময়ে নেওয়া একপাক্ষিক নীতির দায়ভারকে দায়ী করছেন।

শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনকালে প্রশাসনিক দুর্বলতা, অর্থনৈতিক সংকট এবং ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগগুলো বিভিন্ন মহল থেকে উঠে আসছে। কোরা ও অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত মতামত অনুযায়ী, যুদ্ধোত্তর পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের অভাব এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি তার সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছিল।

এছাড়া, বাকশাল গঠন নিয়েও নানা বিতর্ক রয়েছে, যা সমালোচকদের মতে গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর ছিল। এসব কারণে একটি অংশের কাছে তার ভাবমূর্তি ইতিবাচকভাবে প্রতিফলিত হয়নি।

অন্যদিকে, শেখ মুজিবুর রহমানের সমর্থকরা এই সব অভিযোগকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অপপ্রচার বলে মনে করেন। তারা বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক কে, এমন অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক সৃষ্টি করে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার নায়ক হিসেবে প্রতিস্থাপন করার চেষ্টা হয়েছে, যা ইতিহাসের মূল সত্যকে বিকৃত করার শামিল। তাদের মতে, দীর্ঘদিন ধরে চলা স্বাধিকার আন্দোলন এবং ৬ দফার মূল নায়ক হিসেবে শেখ মুজিবের অবদান অনস্বীকার্য।

এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে দলনিরপেক্ষভাবে তুলে ধরা অত্যন্ত জরুরি। তরুণ প্রজন্মের কাছে সঠিক তথ্য তুলে ধরার জন্য বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ গবেষণা প্রয়োজন। একপাক্ষিক ইতিহাস চর্চা, তা যে দলের পক্ষেই হোক না কেন, দীর্ঘমেয়াদে জাতির জন্য ক্ষতিকর।