শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২

সাঈদীর স্মরণে কাণ্ডারীর ‘আয়াত বলা পাখি’: ভক্তদের চোখে জল

শাহিন ইসলাম

আগস্ট ১৫, ২০২৫, ১০:৫৯ এএম

সাঈদীর স্মরণে কাণ্ডারীর ‘আয়াত বলা পাখি’: ভক্তদের চোখে জল

একজন মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও শূন্যতা কীভাবে সুর আর কথায় মূর্ত হয়ে ওঠে? কাণ্ডারী শিল্পীগোষ্ঠীর নতুন ইসলামিক সঙ্গীত "আয়াত বলা পাখি" ঠিক সেই গভীর আবেগেরই এক শৈল্পিক প্রকাশ, যা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর অনুসারীদের হৃদয়ে এক বিষাদের लहर তুলেছে।

শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (রহঃ)-এর দ্বিতীয় শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে কাণ্ডারী শিল্পীগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে এই গানটি নিবেদন করা হয়েছে। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রীতিমতো ঝড় তুলেছে এবং লক্ষ লক্ষ শ্রোতার হৃদয়ে গভীরভাবে দাগ কেটেছে। গানটির মূল শক্তি এর মর্মস্পর্শী কথা, যা লিখেছেন বিলাল হোসাইন নূরী। তিনি তাঁর লেখনীতে আল্লামা সাঈদীর বাগ্মীতা, কোরআনের প্রতি তাঁর ভালোবাসা এবং তাঁর অনুপস্থিতিতে সৃষ্ট শূন্যতাকে ফুটিয়ে তুলেছেন।

"বুলবুলি নেই, শূন্য এখন মনের গুল-বিতান" কিংবা "'নাহমাদুহু' সুরের মায়ায় কে শোনাবে গান"—এর মতো পংক্তিগুলো সরাসরি সাঈদীর অনুসারীদের মনের কথাকেই যেন প্রতিধ্বনিত করে। গানটির সুরারোপ করেছেন মাহমুদ ফয়সাল, যার বিষাদমাখা ও হৃদয়স্পর্শী সুর শ্রোতাদের গানের গভীরে নিয়ে যেতে বাধ্য করে। আব্দুর রহমান, মুহাম্মদ রিয়াজ, তাহমিদ আবশার এবং সাইফ আদনানের মতো শিল্পীদের সম্মিলিত কণ্ঠের আবেগ গানটিকে এক ভিন্ন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।

দিনাজপুর টিভির পক্ষ থেকে গানটির বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এটি শুধু একজন ব্যক্তিকে স্মরণ নয়, বরং একটি আদর্শিক শূন্যতার হাহাকারকে ধারণ করেছে। গানটির আবেদনকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে এর গল্পনির্ভর ভিডিও। এইচ এম রাজুর পরিচালনায় নির্মিত এই ভিডিওতে দেখা যায়, এক তরুণ তার বয়োবৃদ্ধ দাদাকে নিয়ে পিরোজপুরে আল্লামা সাঈদীর কবর জিয়ারত করতে যাচ্ছে। দাদার চরিত্রে অভিনয় করা তৌহিদ হাসান রুমির অভিব্যক্তি এবং সাঈদীকে একনজর দেখার তার আজীবনের অপূর্ণ ইচ্ছার গল্পটি লক্ষ লক্ষ ভক্তের না বলা কষ্টের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে।

পিরোজপুর, নোয়াখালী ও ফেনীর বিভিন্ন মনোরম লোকেশনে ধারণকৃত দৃশ্যগুলো গানটির ভিজ্যুয়াল আবেদনকে সমৃদ্ধ করেছে। কাওসার এ মারুফের পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মিত এই কাজটি প্রমাণ করে যে, এটি কেবল একটি বাণিজ্যিক প্রযোজনা নয়, বরং আল্লামা সাঈদীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। হাসিবুর রহমানের লেখা স্ক্রিপ্ট এবং আহমেদ রাসেলের নিপুণ অডিও মাস্টারিং গানটির প্রতিটি উপাদানকে নিখুঁতভাবে সমন্বিত করেছে। এই গানটি সেইসব অনুসারীর জন্য একটি সান্ত্বনা, যারা তাদের প্রিয় "কোরআনের পাখিকে" হারিয়ে আজও শোকাহত।

এই গজলটি কেবল একটি স্মৃতিচারণ নয়, বরং অনুসারীদের হৃদয়ে আল্লামা সাঈদীর আদর্শ ও শূন্যতাকে বাঁচিয়ে রাখার এক শৈল্পিক প্রয়াস হয়ে থাকবে।