আগস্ট ১৪, ২০২৫, ০৭:৩৭ পিএম
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। একইসঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। বুধবার সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, তার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান লক্ষ্য হলো সংস্কার, বিচার এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, “আমাদের অঙ্গীকার ছিল এই গণঅভ্যুত্থানের সময় জনগণের কাঙ্ক্ষিত সংস্কার, গণঅভ্যুত্থানের সময় তারা জাতির প্রতি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা নিশ্চিত করা। এই লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।” তিনি মনে করেন, প্রথমে নির্বাচন না করে সংস্কার ও বিচার করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে দেশ আবার পুরোনো সমস্যায় ফিরে যাবে। ড. ইউনূস বলেন, তিনি একটি “সুন্দর নির্বাচন” দেখতে চান, যা হবে একটি গ্রামীণ মেলার মতো, যেখানে কোনো উত্তেজনা থাকবে না এবং সবাই স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট দিতে পারবে।
ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, “আমরা পাকিস্তান ও চীনের মতো ভারতের সঙ্গেও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চাই।” তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের মানচিত্র না আঁকলে ভারতের মানচিত্র আঁকতে পারবেন না। আসলে, প্রতিটি (দেশ) একে অপরকে তার অস্তিত্বের মাধ্যমে সংজ্ঞায়িত করে।” তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলকে আরও বিস্তৃত করার প্রস্তাব দেন, যেখানে নেপাল ও ভুটানকে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এমনকি ভারতের সাতটি রাজ্যও এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে যুক্ত হয়ে বঙ্গোপসাগরের সুবিধা ভাগাভাগি করে নিতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ড. ইউনূস সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে “দানব” বলে অভিহিত করে বলেন, “যদি আপনার কাছে এক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী কোনো শব্দ থাকতো তাহলে আমি সেটাই ব্যবহার করতাম।” তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য ভারত সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করা হয়নি, তবে তার সরকার চায় ভারত যেন তাকে ব্যবহার করে বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরি করার সুযোগ না দেয়। তিনি বলেন, “আমরা (ভারতকে) বলেছি যে, তোমরা তাকে রাখতে পারো। আমাদের বিচার চলবে। বিচারই তার ভাগ্য নির্ধারণ করবে।”