আগস্ট ২৭, ২০২৫, ০২:১৪ পিএম
তিন দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনরত প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) শাহবাগ থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’ অভিমুখে মিছিল নিয়ে এগোনোর চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে তাদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ এবং সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এটি দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
সকাল থেকেই বুয়েটসহ দেশের বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে রেখেছিল। তারা দুপুর ১টা পর্যন্ত সরকারকে তাদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সময় বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু সরকার পক্ষ থেকে কোনো সাড়া না আসায় শিক্ষার্থীরা দুপুর দেড়টার দিকে ‘যমুনা’ অভিমুখে অগ্রসর হতে শুরু করে। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পুলিশ তাদের গতিরোধ করে এবং সেখানেই উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। ঘটনাস্থলে রায়ট পুলিশও উপস্থিত ছিল, যা পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তোলে।
, পুলিশ প্রথমে শিক্ষার্থীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেও তারা পিছু না হটলে একপর্যায়ে লাঠিচার্জ শুরু করে এবং তাদের লক্ষ্য করে তিনটি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এই আকস্মিক পদক্ষেপে শিক্ষার্থীরা হতবিহ্বল হয়ে পড়লে দ্রুত ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তবে এই ঘটনায় কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, এই ঘটনার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেসুর রহমান মন্তব্য করেছেন যে, বুয়েট শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের প্রয়োজন ছিল না। সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে পেশ করা হলে সহজেই সমাধান করা সম্ভব।” তিনি আরও জানান, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সরকারের কাছে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আসেনি। প্রস্তাব পেলে আইন মন্ত্রণালয় এবং পিএসসিসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে বসে বিষয়টি সমাধান করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন। একইসঙ্গে তিনি রাস্তা বন্ধ করে মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করার জন্য শিক্ষার্থীদের সমালোচনা করেন।
এই সংঘর্ষের ঘটনাটি দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি সংবেদনশীল বিষয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং সরকারের কঠোর অবস্থানের মধ্যেকার টানাপোড়েনকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। দেশের বিভিন্ন মহলের বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের উচিত শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা এবং আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা। অন্যথায়, এই ধরনের ঘটনা আরও বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকটের জন্ম দিতে পারে।