বুধবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৫, ১২ ভাদ্র ১৪৩২

আবু সাঈদ হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু আজ

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ২৭, ২০২৫, ১০:১৮ এএম

আবু সাঈদ হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু আজ

ছবি- সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর সামনে আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে। এই মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে। সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদসহ ৩০ জন আসামির বিরুদ্ধে এই বক্তব্য উপস্থাপন করা হবে, যা বিচারিক প্যানেলের সামনে মামলার সারসংক্ষেপ তুলে ধরবে। এই ঘটনা দেশের বিচারব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল আজ এই মামলার সূচনা বক্তব্য শুনবেন। একইসঙ্গে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শুরু হওয়ারও কথা রয়েছে। এর আগে গত ৬ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলার আসামিদের মধ্যে ছয়জন গ্রেফতার হয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন এএসআই আমির হোসেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ। বাকি ২৬ জন, যার মধ্যে সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদও রয়েছেন, এখনো পলাতক।

আমাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, পলাতক আসামিদের পক্ষে আইনি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য গত ২২ জুলাই সরকারি খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। এদের মধ্যে সুজাত মিয়া পাঁচজন আসামির পক্ষে এবং মামুনুর রশীদ নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাদের পক্ষে আইনি লড়াই করছেন। এছাড়া আইনজীবী ইশরাত জাহান ও শহিদুল ইসলামও এ মামলার সাথে যুক্ত রয়েছেন। অন্যদিকে, প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম, মিজানুল ইসলাম, মঈনুল করিম এবং আবদুস সাত্তার পালোয়ান যুক্ত রয়েছেন।

প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই মামলায় তাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে যা আসামিদের দোষ প্রমাণ করতে পারে। গত ২৮ জুলাই অভিযোগ গঠনের শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম মামলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। এর আগে গত ৩০ জুন আদালত এই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়েছিল এবং তারও আগে ২৪ জুন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছিলেন।

এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার মধ্য দিয়ে আবু সাঈদের পরিবারের পক্ষ থেকে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা জোরালো হয়েছে। এই ঘটনাটি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল এবং এটি দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে একটি সংবেদনশীল মামলা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হলে তা অপরাধের বিরুদ্ধে আইন ও বিচার ব্যবস্থার কার্যকারিতা প্রমাণ করবে বলে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা।