রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

হতাশা নিয়েই ট্র্যাকে ফিরছেন ইমরানুর

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

জুলাই ২৬, ২০২৫, ০২:৫৬ পিএম

হতাশা নিয়েই ট্র্যাকে ফিরছেন ইমরানুর

ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশের অ্যাথলেটিক্স জগতে ইমরানুর রহমান একটি পরিচিত নাম, যিনি দ্রুততম মানব হিসেবে দেশবাসীর কাছে পরিচিতি পেয়েছেন। বিদেশে প্রশিক্ষণ ও অনুশীলন করে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছেন তিনি। তবে সম্প্রতি ইনজুরির কারণে তাকে ট্র্যাক থেকে দূরে থাকতে হয়েছে। এই সময়ে ফেডারেশনের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা না পাওয়ায় তার মনে তৈরি হয়েছে হতাশা। তবে সেই হতাশা কাটিয়ে তিনি আবারও ট্র্যাকে ফিরতে প্রস্তুত, যার লক্ষ্য দেশের দ্রুততম মানবের খেতাব পুনরুদ্ধার করা।

ইনজুরি এবং আর্থিক সহায়তার হতাশা কাটিয়ে আবারও ট্র্যাকে ফিরছেন লন্ডনপ্রবাসী বাংলাদেশি অ্যাথলেট ইমরানুর রহমান। আগামী ২২-২৩ আগস্ট ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সামার অ্যাথলেটিকসে তিনি অংশ নেবেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর হয়ে। তার লক্ষ্য, এক মৌসুম আগে মোহাম্মদ ইসমাইলের কাছে হারানো দেশের দ্রুততম মানবের খেতাব পুনরুদ্ধার করা।

 

গত ফেব্রুয়ারিতে চোটের পুনর্বাসনে থাকায় ঢাকায় জাতীয় অ্যাথলেটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে পারেননি ইমরানুর। অথচ ২০২২ সালে ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় প্রথমবার অংশ নিয়েই তিনি খেতাবটি নিজের করে নিয়েছিলেন।

ট্র্যাকে ফেরার আগে ইমরানুরের মনে হতাশা। চোটের চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন থেকে আর্থিক সহায়তা চেয়েও পাননি তিনি। মুঠোফোনে ইমরানুর বলেন, “চিকিৎসার জন্য একাধিকবার ফেডারেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তারা বলেছিল দেখবে, কিন্তু কিছুই করেনি। তবে অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজা ভাইসহ কয়েকজন সিনিয়র পাশে ছিলেন। আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।” গত অক্টোবরে লন্ডনে ইমরানুরের অস্ত্রোপচার হয়, যেখানে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম অবশ্য দাবি করেছেন যে, ইমরানুর তার কাছে কোনো সহায়তা চাননি। তবে যুগ্ম সম্পাদক কিতাব আলী ভিন্ন তথ্য দিয়ে বলেন, "সে আমাদের কোনো চিঠি দেয়নি। তবে মৌখিকভাবে হয়তো বলে থাকতে পারে। আমাদের ফেডারেশন সভাপতি এক সভায় তার সংস্থাকে খরচ বহনের কথা বলেছিলেন। কিন্তু পরে তো সে দল বদলে ফেলল।"

তবে দল বদলালে যে সহায়তা পাওয়া যাবে না, তা নয়। বরং ফেডারেশনের বর্তমান কমিটির অধীন কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ না নেওয়াটাই সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়েছে। কিতাব আলীর কথায় সে আভাসও মিলেছে, "গত কমিটির সময় চোট পেয়েছিল ইমরানুর। আমাদের সময় সে এখনো খেলেনি। সামারে খেললে তাকে দেখে পরে আমরা ভাবতে পারি। সে আসুক, খেলুক। তারপর দেখব।"

 

সব হতাশা কাটিয়ে ইমরানুর এখন সামনে তাকাতে চান। তিনি বলেন, “ফেডারেশনের প্রতি সম্মান আছে। হতাশ ছিলাম, সত্যি। কিন্তু এখন সামনে তাকাতে চাই। দেশের হয়ে আরও ভালো করার স্বপ্ন দেখছি।” সেই স্বপ্ন পূরণের জন্যই তিনি চান, ফেডারেশন যেন অন্তত কিছু আর্থিক সহায়তা করে। ২০২৩ সালে কাজাখস্তানে এশিয়ান ইনডোরে ৬০ মিটার স্প্রিন্টে সোনাজয়ী ইমরানুর বলেন, “সব অ্যাথলেটের জন্যই আর্থিক সহায়তা থাকা দরকার। যারা দেশের পতাকা তুলে ধরতে চায়, তাদের পাশে দাঁড়ানো সবার দায়িত্ব। ব্যক্তিগত হতাশা থাকলেও দেশের পতাকা তুলে ধরাই আমার মূল লক্ষ্য।”

বর্তমানে লন্ডনে চাকরির পাশাপাশি নিয়মিত অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন ইমরানুর। সম্প্রতি তিনি মুঠোফোন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ভিভোর শুভেচ্ছাদূতও হয়েছেন।