সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

স্ত্রীর সম্পর্কে অনৈতিক কথা বলায় যুবককে ৮ টুকরা করে আসামিরা

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ১০, ২০২৫, ০২:২৬ পিএম

স্ত্রীর সম্পর্কে অনৈতিক কথা বলায় যুবককে ৮ টুকরা করে আসামিরা

ছবি- সংগৃহীত

স্ত্রীর সম্পর্কে অনৈতিক কথা বলা ও আপন ভাগনেকে মারধর করার জেরে অলি মিয়া (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে নৃশংসভাবে ৮ টুকরা করে হত্যা করেছে আসামিরা। হত্যাকাণ্ডের পর মাথা টয়লেটের ফলস ছাদে লুকিয়ে রেখে দেহের বাকি ৮ টুকরা দুটি ট্রাভেল ব্যাগে ভরে টঙ্গীর রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়। র‌্যাব-১ এর হাতে গ্রেপ্তার তিন আসামির বরাত দিয়ে আজ রবিবার (১০ আগস্ট) সকালে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১ এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে।

র‌্যাব-১ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক (অপস্ অ্যান্ড মিডিয়া অফিসার) সালমান নূর আলম স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ৮ আগস্ট টঙ্গী থেকে আট টুকরা লাশ উদ্ধারের পর র‌্যাব-১ ছায়া তদন্ত শুরু করে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী এলাকায় পালিয়ে থাকা তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন— নরসিংদী সদর থানার করিমপুর এলাকার আব্দুল মোতালেবের ছেলে আপেল মাহমুদ সাদেক (৪২), মজনু মিয়ার ছেলে সাজ্জাদ হোসেন রনি (২৫) এবং আপেল মাহমুদের স্ত্রী শাওন বেগম (৩২)। নিহত অলি মিয়া একই এলাকার সুরুজ মিয়ার ছেলে। গ্রেপ্তারকৃত ও নিহত সবাই টঙ্গী এলাকায় থাকতেন।

গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা নৃশংস খুনের দায় স্বীকার করে পুরো ঘটনার বর্ণনা দেয়। আসামিদের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে র‌্যাব জানায়, ভিকটিম অলি আসামি আপেল মাহমুদ সাদেকের স্ত্রীর চরিত্র সম্পর্কে খারাপ কথা বলায় সাদেক উত্তেজিত হয়। এছাড়া, অলি সাদেকের আপন ভাগনেকে মারধর করেছিল। এই দুই কারণে সাদেক এবং সাজ্জাদ হোসেন রনি মিলে অলিকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ৬ আগস্ট কৌশলে টঙ্গীর বনমালা এলাকায় সাদেকের ভাড়া বাসায় অলিকে আনা হয়। এরপর সাদেক ও সাজ্জাদ মিলে অলিকে ট্রেনের নিচে ফেলে হত্যা করতে রেললাইনে নিয়ে যায়। কিন্তু কোনো ট্রেন না পাওয়ায় তারা পুনরায় সাদেকের বাসায় ফিরে আসে।

এর কিছুক্ষণ পর সাদেক ও রনি রুমের দরজা বন্ধ করে অলিকে হত্যা করে এবং লাশ ৮ টুকরা করে। লাশের মাথাটি টয়লেটের ফলস ছাদে লুকিয়ে রাখা হয়।

এই অবস্থায় দুই দিন কেটে গেলে লাশের গন্ধ বের হতে শুরু করে। পরে গত ৮ আগস্ট ভোরে দুটি ব্যাগে লাশের টুকরা ভরে টঙ্গী-কালিগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের টঙ্গী স্টেশন রোডে ফেলে চলে যায় খুনিরা। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ লাশের টুকরা উদ্ধার করার পর র‌্যাব অভিযান চালিয়ে এই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে হত্যার রহস্য উদঘাটন করে।

এদিকে টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে নরসিংদীর একই এলাকা করিমপুরের নাসির উদ্দিনের ছেলে বাপ্পী হোসেনকে (২৮) গাজীপুরের গাছা এলাকা থেকে আটক করে। তার দেওয়া তথ্যমতে, টঙ্গীর বনমালা রোডে আপেল মাহমুদ সাদেকের বাসার টয়লেটের ফলস ছাদ থেকে নিহত অলির মাথা ও পরিধেয় কাপড়চোপড় উদ্ধার করা হয়।

টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম বলেন, "এই মামলায় গাছা এলাকা থেকে বাপ্পী নামে একজনকে আটক করে তার দেওয়া তথ্যমতে টঙ্গীর বনমালা এলাকায় আসামি সাদেকের বাসার টয়লেটের ফলস ছাদ থেকে নিহত অলির মাথা ও পরিধেয় কাপড়চোপড় উদ্ধার করা হয়েছে।"