বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২
চীনা

বিরামপুরে চীনা নাগরিকের আগমন, গুজব উড়িয়ে দিলেন রিতা বেগম

মো:ফাহিম সরকার

সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ০৬:৩৪ পিএম

বিরামপুরে চীনা নাগরিকের আগমন, গুজব উড়িয়ে দিলেন রিতা বেগম

ছবি-দিনাজপুর টিভি

সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো কেবল যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং তথ্য এবং গুজবের উৎসও হয়ে উঠেছে। দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার হাবিবপুর দয়ারপাড় গ্রামের ঘটনাটি এর এক বাস্তব উদাহরণ। এখানে একজন চীনা নাগরিকের আগমনকে কেন্দ্র করে যে গুজব ছড়িয়েছে, তা স্থানীয়রা নিজেরাই উড়িয়ে দিয়েছেন।

ঘটনার সূত্রপাত হয় স্থানীয় রিতা বেগমের সঙ্গে চীনা নাগরিক লি ছোয়াচো-র পরিচয় থেকে। রিতা বেগম জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি অ্যাপের মাধ্যমে তাদের দুজনের পরিচয় হয়।

তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং এক পর্যায়ে লি ছোয়াচো রিতা বেগমকে বোন হিসেবে গ্রহণ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি তার পরিবারের সঙ্গে পরিচিত হতেও আগ্রহী হন। এই আগ্রহ থেকেই ভিডিও কলে তিনি রিতা বেগমের মায়ের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাকে 'মা' বলে সম্বোধন করেন।

লি ছোয়াচো বাংলাদেশের সংস্কৃতি এবং জীবনযাত্রা সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করলে রিতা বেগম তার পরিবার ও স্বামীর সঙ্গে আলোচনা করেন এবং তাকে বাংলাদেশে আসার অনুমতি দেন।

গত ৯ সেপ্টেম্বর তিনি ঢাকায় আসেন এবং রিতা বেগমের পরিবার তাকে রিসিভ করে বিরামপুরে নিয়ে আসে। এরপরই গ্রামে উৎসুক জনতার ভিড় দেখা যায়, যা স্বাভাবিক ছিল।

তবে এই স্বাভাবিক আগমনকে কেন্দ্র করে কিছু ফেসবুক পেজ এবং ভুয়া আইডি থেকে নানা মিথ্যা তথ্য এবং গুজব ছড়ানো হয়। বলা হয় যে, প্রেমের টানে এই চীনা নাগরিক বাংলাদেশে এসেছেন। এই ধরনের গুজবে এলাকার মানুষ বিভ্রান্ত হয়।

এই ভুয়া তথ্যের বিরুদ্ধে রিতা বেগম নিজেই মুখ খোলেন। তিনি বলেন, “কিছু ফেসবুক পেজ ও ভুয়া আইডি থেকে বলা হচ্ছে প্রেমের টানে চীনা নাগরিক বাংলাদেশে এসেছে। আসলে বিষয়টি সত্য নয়।

আমার সংসার আছে, একটি ছেলে আছে। যারা এসব মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে তারা আমার সম্মানহানী করার চেষ্টা করছে। দয়া করে আপনারা সত্য জানুন এবং সত্য প্রচার করুন।”

এলাকাবাসী আব্দুল্লাহ মাহমুদও রিতা বেগমের পক্ষে কথা বলেন। তিনি বলেন, “তিনি আমাদের গ্রামে এসেছেন, আমাদের অতিথি হিসেবে আমরা তাকে সাদরে গ্রহণ করছি। গতকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া তথ্য দিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। দয়া করে কেউ গুজবে কান দেবেন না।”

এই ঘটনাটি আমাদের একটি বড় শিক্ষা দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো তথ্য দেখার সঙ্গে সঙ্গে তা বিশ্বাস করা উচিত নয়। যাচাই-বাছাই না করে কোনো কিছু শেয়ার করলে তা অনেক মানুষের জীবন ও সম্মানকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

এই চীনা নাগরিকের আগমন ছিল কেবল একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং সংস্কৃতির আদান-প্রদান, যা নিয়ে মিথ্যা গুজব ছড়ানো হয়েছে।