আগস্ট ২৭, ২০২৫, ১০:৩৮ এএম
দেশের বাজারে আবারও বাড়ানো হয়েছে স্বর্ণের দাম। প্রতি ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা বেড়ে এখন ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৫১ টাকা। বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) মঙ্গলবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নতুন মূল্য ঘোষণা করেছে, যা আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) থেকে কার্যকর হচ্ছে। এই মূল্যবৃদ্ধি দেশের জুয়েলারি ব্যবসা এবং ভোক্তাদের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাজুসের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশীয় বাজারেও দাম সমন্বয় করা হয়েছে। নতুন নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী, প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৭২ হাজার ৬৫১ টাকা, ২১ ক্যারেট ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮০১ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ লাখ ৪১ হাজার ২৬৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ১৬ হাজার ৮৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
রিপোর্টারের ভয়েস থেকে জানা গেছে, জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা এই মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং স্বর্ণের সরবরাহ চেইনকে দায়ী করছেন। তাদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের বিপরীতে স্বর্ণের দাম ওঠানামা করছে, যার প্রভাব স্থানীয় বাজারেও পড়ছে। তবে ভোক্তাদের মধ্যে এই দাম বৃদ্ধি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই মনে করছেন, ঘন ঘন দাম পরিবর্তন ক্রেতাদের মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। বাজুস তাদের বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করেছে যে, স্বর্ণের বিক্রয় মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যোগ করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির ভিন্নতা হতে পারে।
এর আগে সবশেষ গত ২৪ জুলাই দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছিল, যখন ভরিতে ১ হাজার ৫৭৪ টাকা কমানো হয়েছিল। সে সময় ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার ৬০১ টাকা। ওই দাম কার্যকর হয়েছিল গত ২৫ জুলাই থেকে। মাত্র এক মাসের মধ্যে আবারও দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত দেশের বাজারে স্বর্ণের মূল্য স্থিতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, স্বর্ণের এই মূল্যবৃদ্ধি কেবল অলংকার ক্রেতাদেরই নয়, বরং যারা স্বর্ণকে বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে দেখেন তাদের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি মুদ্রাস্ফীতির একটি নির্দেশক হতে পারে, যা দেশের অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্রের ওপর প্রভাব ফেলে। এই পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকতে হবে।