বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২

শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে যেসব মারাত্মক ক্ষতি হয়, জানুন

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ২০, ২০২৫, ১০:৩৪ এএম

শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে যেসব মারাত্মক ক্ষতি হয়, জানুন

সংগৃহীত

আমাদের শরীরে প্রতিদিন নানা জৈব প্রক্রিয়া চলে, যার মধ্যে ইউরিক অ্যাসিড একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি মূলত প্রোটিনজাত খাবার হজমের সময় তৈরি হয় এবং সাধারণত কিডনির মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু যখন এর পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়, তখন এটি নিঃশব্দে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের মারাত্মক ক্ষতি করতে শুরু করে।

অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড শরীরের সাতটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ক্ষতি করতে পারে:

  • হৃদয় ও রক্তনালির ক্ষতি: রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে রক্তনালিতে প্রদাহ সৃষ্টি হয়, যা ধীরে ধীরে সেগুলোকে শক্ত করে ফেলে। এতে রক্তচাপ বাড়ে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি তৈরি হয়।

  • কিডনিকে ধ্বংস করে: কিডনি ইউরিক অ্যাসিড শরীর থেকে বের করে দেয়। কিন্তু মাত্রা বেশি হলে এটি কিডনিতে জমে ছোট ছোট স্ফটিক তৈরি করে, যা কিডনির কোষে আঘাত করে এবং ধীরে ধীরে কিডনি বিকলের কারণ হতে পারে।

  • ডায়াবেটিসসহ নানা রোগের ঝুঁকি: ইউরিক অ্যাসিড ইনসুলিনের কার্যকারিতায় বাধা দেয়, যা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স নামে পরিচিত। এর ফলে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, পেটের চর্বি এবং খারাপ কোলেস্টেরলসহ মেটাবলিক সিনড্রোমের ঝুঁকি বাড়ে।

  • হাড় ও জয়েন্ট দুর্বল করে: এটি ধীরে ধীরে হাড় ও জয়েন্টের চারপাশে জমতে থাকে এবং কার্টিলেজ বা তরুণাস্থি ক্ষয় করে। এটি গাউট বা গেঁটেবাতের মতো রোগের কারণ, যা অসহনীয় ব্যথা সৃষ্টি করে।

  • কিডনিতে পাথর তৈরি: অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড কিডনিতে পাথরের জন্ম দিতে পারে। ছোট পাথর প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে গেলেও বড় আকারের পাথর কিডনির স্থায়ী ক্ষতি করতে পারে।

  • রক্তচাপ চুপিচুপি বাড়ায়: এটি রক্তনালিকে সংকুচিত করে তোলে, ফলে স্বাভাবিক রক্ত চলাচলে বাধা হয় এবং উচ্চ রক্তচাপ বাড়তে থাকে, যা অনেক সময় সহজে বোঝা যায় না।

  • শরীরে লুকিয়ে থাকা প্রদাহ: ইউরিক অ্যাসিড সারা শরীরে হালকা কিন্তু স্থায়ী প্রদাহ তৈরি করে। এটি ধীরে ধীরে বিভিন্ন অঙ্গকে দুর্বল করে এবং হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে।

ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিছু সহজ উপায় মেনে চলতে পারেন:

  • সময়মতো রক্ত পরীক্ষা করান।

  • দৈনিক প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।

  • লাল মাংস, অ্যালকোহল এবং পিউরিনযুক্ত খাবার কম খান।

  • নিয়মিত শরীরচর্চা করুন।

মনে রাখতে হবে, স্বাস্থ্য এমন এক সম্পদ যার মূল্য তখনই বোঝা যায় যখন তা হারানোর পথে থাকে। তাই আগে থেকে সতর্ক থাকাটাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।