জুলাই ২৬, ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম
সম্প্রতি ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিনব্যাপী এক সংক্ষিপ্ত যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, যেখানে উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন হামলা চালায়। এই যুদ্ধবিরতির পর থেকেই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই যুদ্ধকে তাদের সাফল্য হিসেবে দেখছেন। এদিকে, ইরানও ইসরায়েলের যেকোনো নতুন সামরিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কঠোর জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে। এই পরিস্থিতিতে, ইসরায়েল আবারও ইরানের বিরুদ্ধে একটি নতুন সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করছে বলে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে।
সম্প্রতি ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সংক্ষিপ্ত যুদ্ধের পর, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আবারও একটি সামরিক অভিযানের ইঙ্গিত দিয়েছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু তার ‘গ্যাসের প্যাডেল থেকে পা সরানোর’ কোনো ইচ্ছা রাখেন না, যা থেকে বোঝা যায় তিনি ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
গত মাসের শুরুতে ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলের কয়েকটি বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইসরায়েল এই যুদ্ধকে তাদের সাফল্য হিসেবে দেখছে। তবে ইরানও এর পাল্টা জবাব দিয়ে ইসরায়েলের ভেতরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল এবং কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতেও হামলা চালিয়েছিল।
আল জাজিরাকে দেওয়া একাধিক বিশ্লেষকের মতে, ইসরায়েল বর্তমানে এমন একটি সুযোগ খুঁজছে, যার মাধ্যমে তারা ইরানকে আরও দুর্বল করতে পারবে কিংবা দেশটির শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবে। তবে এমন একটি বড় ধরনের অভিযান চালানোর জন্য ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতি নিতে হবে, যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের কাছ থেকে সহজে মিলবে না বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন।
এই প্রসঙ্গে ইরানবিষয়ক বিশ্লেষক ত্রিতা পারসি বলেছেন, "নেতানিয়াহুর লক্ষ্য ইরানকে সিরিয়া বা লেবাননের মতো একটি দেশে পরিণত করা, যেখানে ইসরায়েল প্রয়োজনে যেকোনো সময় হামলা চালাতে পারবে এবং তেমন কোনো প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হবে না।" তিনি আরও বলেন, "ইসরায়েল এই যুদ্ধ পুনরায় শুরু করতে চায়, কারণ তারা ইরানকে এমন এক অবস্থায় এনে দিতে চায়, যাতে তা বারবার আঘাত করার জন্য উন্মুক্ত থাকে।"
এদিকে, আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন, তারা ইসরায়েলের যেকোনো নতুন সামরিক অভিযানের জন্য প্রস্তুত। তিনি বলেন, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী আবারও ইসরায়েলের ভেতরে গভীরভাবে আঘাত হানতে সক্ষম।
সবমিলিয়ে, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পাচ্ছে। ইসরায়েলের সম্ভাব্য নতুন হামলা এবং ইরানের পাল্টা জবাবের প্রস্তুতির কারণে পুরো অঞ্চল একটি নতুন সংকটের দিকে এগোচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আপনার মতামত লিখুন: