সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৫, ০৯:৪১ এএম
বিএনপি দলের ভাবমূর্তি নষ্ট ও শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। শৃঙ্খলা রক্ষায় দলটি জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে। আর্থিক কিংবা অন্য কোনো সুবিধার কারণে আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসী নেতা-কর্মীদের দলে অন্তর্ভুক্ত করা, নিজের আধিপত্য বিস্তারে ত্যাগী ও যোগ্য ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে অযোগ্য ও অপদার্থদের দিয়ে কমিটি গঠন, কমিটিবাণিজ্য, চাঁদাবাজি, হুমকিধমকি, মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, অনিয়ম-দুর্নীতি থেকে শুরু করে যেকোনো ধরনের অপকর্মের বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রতিদিনই তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন এবং এ বিষয়ে নির্দেশনা দিচ্ছেন।
গত বছর ৫ আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত যাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের তালিকাও তৈরি করে সাংগঠনিক এবং অনেক ক্ষেত্রে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বহিষ্কারসহ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত ৫ সহস্রাধিক নেতার বিরুদ্ধে। যত বড় নেতাই হোন না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। দলের নির্ভরযোগ্য সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সম্প্রতি পিরোজপুর সদর উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মারামারি, হাতাহাতি ও ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জেলা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। অভিযোগের তির কেন্দ্রীয় বিএনপির বন ও পরিবেশবিষয়ক সহসম্পাদক রওনকুল ইসলাম টিপুর দিকে, যিনি মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে আওয়ামী লীগের কয়েক শ ব্যক্তিকে বিএনপিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন বলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া টিপু বৃহত্তর বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় কমিটিবাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী ইউনিয়নের দ্বিবার্ষিক কাউন্সিলে ওয়ার্ড কমিটি গঠনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সেখানে আওয়ামী ও বিএনপিবিরোধী লোকজনকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা সংগঠনের নিয়মনীতির পরিপন্থি। এ বিষয়ে দফায় দফায় জেলা বিএনপিসহ বিভাগীয় পর্যায়ে অভিযোগ দিয়েছেন নেতা-কর্মীরা।
শুধু জেলা, মহানগর ও তৃণমূল নয়, কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রভাবশালী নেতারাও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে নেওয়া ব্যবস্থা থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। অতিসম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের সব ধরনের সদস্যপদ তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় বিরূপ মন্তব্য করায় কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাথী উদয় কুশল বড়ুয়াকে বহিষ্কার করা হয়।
কিছুদিন আগে টঙ্গীর বিভিন্ন শিল্পকারখানায় দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিব উদ্দিন সরকারসহ কয়েকজনকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া বিল পরিশোধ কেন্দ্র করে মহাখালীতে একটি বার ভাঙচুরের ঘটনায় বনানী থানা যুবদলের আহ্বায়ক মনির হোসেনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জানা গেছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে বিএনপি। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নেওয়া হচ্ছে সাংগঠনিক শাস্তির ব্যবস্থা। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও কাউকে না কাউকে বহিষ্কার করা হচ্ছে।