রবিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২

সাক্ষাতের আগেই স্বামী মারা গেলে ইদ্দত কি জরুরি?

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ১৬, ২০২৫, ০৭:৪৭ পিএম

সাক্ষাতের আগেই স্বামী মারা গেলে ইদ্দত কি জরুরি?

ছবি- সংগৃহীত

বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর সাক্ষাতের আগেই যদি স্বামী মারা যান, তাহলে স্ত্রীর জন্য ইদ্দত পালন করা জরুরি কি না—এই প্রশ্নটি অনেকের মনেই উদয় হয়। এ বিষয়ে ইসলামিক বিধান অত্যন্ত স্পষ্ট। শরিয়াহ অনুযায়ী, বিয়ের পর স্বামী মারা গেলে স্ত্রীর জন্য ইদ্দত (চার মাস দশ দিন) পালন করা আবশ্যক, भलेই তাদের মধ্যে কোনো সাক্ষাত না হয়ে থাকে।

ইসলামিক পণ্ডিতদের মতে, স্বামী মৃত্যুর ইদ্দত আবশ্যক হওয়ার জন্য স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মেলামেশা বা নির্জনবাস শর্ত নয়; বরং বিবাহ সহীহভাবে সম্পন্ন হওয়াই যথেষ্ট।

কোরআনের নির্দেশনা: পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন: “আর তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মারা যায়, তাদের স্ত্রীরা নিজেদের চার মাস দশ দিন প্রতীক্ষায় রাখবে।” (সূরা বাকারা, আয়াত ২৩৪)। এই আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, এই বিধানটি স্বামীর সঙ্গে সহবাস হয়েছে বা হয়নি—সকল নারীর জন্যই প্রযোজ্য। এ বিষয়ে সবার ইজমা বা ঐকমত্য রয়েছে।

হাদিস এবং ফিকাহবিদদের মতামত: আতা (রহ.) বলেন, “স্বামী মারা গেলে স্ত্রী চার মাস দশ দিন ইদ্দত পালন করবে, যদিও স্বামীর সঙ্গে সহবাস না হয়ে থাকে।” (মুসান্নাফে আবদুর রায্যাক, বর্ণনা ১২০৪৯)। এই বিধানটি ফিকাহর কিতাবেও সুপ্রতিষ্ঠিত।

ইদ্দত কী ও কেন? ইদ্দত শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো ‘গণনা করা’। শরিয়তের পরিভাষায়, ইদ্দত হলো এমন একটি নির্দিষ্ট সময়কাল, যা একজন নারী তার পূর্ববর্তী বিবাহের প্রভাব থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য অতিবাহিত করে। এই সময়ের মধ্যে তিনি অন্য কোথাও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারেন না।

স্বামী মারা গেলে ইদ্দতের সময়কাল হলো চার মাস দশ দিন। এই সময়কাল শুরু হয় স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই। এই সময়ের মধ্যে স্ত্রী বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে পারবেন না এবং অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবেন না।

সুতরাং, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার মেয়ের ওপর স্বামীর মৃত্যুর ইদ্দত পালন করা জরুরি। ইদ্দত শেষ হওয়ার পূর্বে তাকে অন্যত্র বিবাহ দেওয়া জায়েজ হবে না। এটি ইসলামের সুস্পষ্ট বিধান।