সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২

কেবলার দিকে পা দিলে কি গুনাহ হবে? যা বলছেন আলেমরা

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ১৭, ২০২৫, ০৪:০১ পিএম

কেবলার দিকে পা দিলে কি গুনাহ হবে? যা বলছেন আলেমরা

ছবি- সংগৃহীত

একজন মুমিনের জীবনের অন্যতম বড় স্বপ্ন হলো আল্লাহর ঘর কাবা শরিফকে সামনে থেকে দেখা এবং এর তাওয়াফ করা। এই প্রবল ভালোবাসা আর শ্রদ্ধার কারণেই কাবা এবং কেবলার প্রতি মানুষের সংবেদনশীলতা অনেক বেশি। এই সংবেদনশীলতা থেকেই সম্প্রতি একটি প্রশ্ন সামনে এসেছে: কেবলার দিকে পা দেওয়া কি গুনাহের কাজ? এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আলেমদের মধ্যে নানা মত থাকলেও, সাধারণ মানুষের জন্য একটি নির্দেশনা রয়েছে। এটি ধর্মীয় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আলেমদের মতে, সম্মান প্রদর্শন একটি আপেক্ষিক বিষয়। যে সমাজে কোনো কিছুর দিকে পা রাখাকে অসম্মানের মনে করা হয়, সে সমাজে অবশ্যই কাবার দিকে পা রাখা জায়েজ হবে না। তবে, যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কাবার দিকে পা দিয়ে অবহেলা বা তুচ্ছ জ্ঞান করার মানসিকতা পোষণ করে, তাহলে তা কুফরির শামিল হতে পারে।

বিশেষজ্ঞ আলেমদের মতামত

১. মুফতি আব্দুর রহমান হোসাইনী: রাজধানীর জামিয়াতুল ইসলামিয়া বায়তুস সালামের ফতোয়া বিভাগীয় প্রধান মুফতি আব্দুর রহমান হোসাইনী জানান, কোনো ওজর ছাড়া বা ইচ্ছাকৃতভাবে কেবলার দিকে পা দেওয়া মাকরুহে তাহরিমি (তীব্র অপছন্দনীয় কাজ) এবং গুনাহের কাজ। তিনি বলেন, অনিচ্ছাকৃতভাবে বা উদাসীনতার কারণে এমনটা হলে গুনাহ হবে না, তবে এটি নিঃসন্দেহে আদব পরিপন্থি কাজ। তিনি আরও জানান যে, ইচ্ছাকৃতভাবে কেবলার দিকে পা ছড়িয়ে দেওয়া ব্যক্তির সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়, যা একটি ফাসিকি বা পাপ কাজের লক্ষণ।

২. শায়খ আহমাদুল্লাহ: প্রখ্যাত ইসলামী স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, কেবলার দিকে পা দিয়ে ঘুমানো, বসা বা শোয়া আহনাফ আলেমদের মতে মাকরুহ। তিনি যুক্তি দেন, নবীজি (সা.) কেবলার দিকে ফিরে পেশাব-পায়খানা করতে নিষেধ করেছেন, যা মূলত কেবলার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য। কাবার দিকে পা লম্বা করে বসলে বাহ্যিক দৃষ্টিতে অসম্মান হয়, তাই ওজর ছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে এমনটা করা আদবের খেলাফ।

তবে তিনি উল্লেখ করেন যে, সৌদি আলেমদের মধ্যে এই বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। তাদের মতে, কোরআন-হাদিসে সরাসরি এমনটি করতে নিষেধ করা হয়নি, তাই এতে কোনো অসুবিধা নেই।

সারসংক্ষেপ দুই বিশেষজ্ঞ আলেমের মতামতের ভিত্তিতে বলা যায়, যেহেতু ইসলামে আল্লাহর নিদর্শনগুলোকে সম্মান করা ফরজ এবং কেবলার দিকে পা রাখাকে অসম্মানজনক মনে করা হয়, তাই ইচ্ছাকৃতভাবে ও অকারণে এমন কাজ করা উচিত নয়। যদিও অনিচ্ছাকৃতভাবে এমনটা হলে গুনাহ হবে না, তবে সতর্কতা ও অধিকতর নিরাপদ মত হলো কেবলার দিকে পা না রাখা।