আগস্ট ১৭, ২০২৫, ১২:১৯ পিএম
ইসলামে আল্লাহর একত্ববাদ বা তাওহিদের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা নিজেই তাঁর এক ইলাহ হওয়ার সাক্ষ্য দিয়েছেন, যা একজন মুসলিমের ঈমানের মূল ভিত্তি। এই সাক্ষ্য প্রদানে আল্লাহ শুধু একা নন, বরং ফেরেশতা এবং জ্ঞানীরাও তাঁর একত্ববাদের ব্যাপারে সাক্ষ্য দেন।
পবিত্র কোরআনের সূরা আলে ইমরানের ১৮ নম্বর আয়াতে এই বিষয়ে পরিষ্কার উল্লেখ রয়েছে:
شَهِدَ اللّٰهُ اَنَّهٗ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ۙ وَ الۡمَلٰٓئِكَۃُ وَ اُولُوا الۡعِلۡمِ قَآئِمًۢا بِالۡقِسۡطِ ؕ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ الۡعَزِیۡزُ الۡحَكِیۡمُ
অর্থ: "আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে, নিশ্চয় তিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ নেই। আর ফেরেশতাগণ এবং জ্ঞানীগণও, আল্লাহ ন্যায়নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। তিনি ছাড়া অন্য কোনো সত্য ইলাহ নেই, (তিনি) পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।"
এই আয়াত নাজিলের একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রয়েছে। বাগবী এবং কালাবী থেকে বর্ণিত আছে যে, শামদেশ থেকে দুইজন ইহুদী আলেম রাসুল (সা.)-এর দরবারে হাজির হয়ে জানতে চাইলেন, আল্লাহর কিতাবে সবচেয়ে বড় সাক্ষ্য কোনটি? এই প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতেই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। এই আয়াতের মর্মার্থ উপলব্ধি করে ওই দুই ইহুদী আলেম তৎক্ষণাৎ ইসলাম গ্রহণ করেন।
হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, আল্লাহ সকল সৃষ্টির চার হাজার বছর আগেই তাদের রুহ সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের রিজিক নির্ধারণ করেছেন। সৃষ্টির অভ্যুদয়ের পূর্বে আল্লাহ একাই ছিলেন এবং তখনই তিনি তার এক ইলাহ হওয়ার সাক্ষ্য ঘোষণা করেছিলেন।
এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা বিশ্বজগতের সকল সত্য, তত্ত্ব এবং রহস্যের প্রত্যক্ষ জ্ঞান রাখেন এমন সত্তা হিসেবে নিজেই সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, তিনি ব্যতীত আর কোনো ইলাহ নেই। তাঁর চেয়ে নির্ভরযোগ্য সাক্ষ্য আর কেউ দিতে পারে না, কারণ পৃথিবীতে ইলাহ হওয়ার যোগ্য আর কেউ নেই। তিনি ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করা অন্যায় ও জুলুম।
আল্লাহ এই মহৎ সাক্ষ্যের সঙ্গে তাঁর ফেরেশতাদেরকেও শরিক করেছেন, যারা সর্বদা আল্লাহর একত্ববাদের সাক্ষ্য দিয়ে থাকেন। এরপর তিনি আলেম তথা দ্বীনের জ্ঞানে জ্ঞানী ব্যক্তিদেরও এই সাক্ষ্য প্রদানের জন্য সম্মানিত করেছেন। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা মূলত আলেমদের মর্যাদা বহুগুণে বৃদ্ধি করেছেন। এটি প্রমাণ করে যে, ইসলামে জ্ঞান ও জ্ঞানের অধিকারী ব্যক্তির সম্মান কত বেশি।