সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৫, ১২:৪৬ এএম
এশিয়া কাপের 'বি' গ্রুপে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে আফগানিস্তানকে হারিয়ে নিজেদের পাশাপাশি বাংলাদেশকে নিয়ে সুপার ফোরে উঠে এসেছে শ্রীলঙ্কা। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আবু ধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ৬ উইকেটে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে আফগানিস্তান। এই ম্যাচের আগে তিন দলের সুপার ফোর ভাগ্য নির্ভর করছিল এক জটিল সমীকরণের ওপর, যা শেষ পর্যন্ত লঙ্কানদের জয়ে বাংলাদেশের পক্ষে আসে।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে আফগানরা ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৯ রান করে। তাদের শুরুটা ছিল দারুণ। দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও সেদিকউল্লাহ আতল প্রথম দুই ওভারেই ২৬ রান যোগ করেন। কিন্তু তৃতীয় ওভারেই লঙ্কান পেসার নুয়ান তুশারার পেসের তোপে পড়ে আফগানরা। গুরবাজ (১৪) এবং করিম জানাত (১) দ্রুত সাজঘরে ফেরেন। এক ওভার পর আতলকেও (১৮) বোল্ড করে আফগানিস্তানকে চাপে ফেলে দেন মালিঙ্গার মতো অ্যাকশনে বল করা এই তরুণ পেসার।
আফগানিস্তানের ৭৯ রানে ৬ উইকেট পড়ে গেলে এক সময় তাদের ১২০ রান করা নিয়েও শঙ্কা দেখা দেয়। তবে শেষ দিকে অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবী একাই ঝোড়ো ইনিংস খেলেন। তার ৬০ রানের ইনিংসে ভর করে আফগানরা সম্মানজনক স্কোর দাঁড় করায়। ২৭২.৭২ স্ট্রাইকরেটে খেলা তার ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও ৬টি ছক্কার মার। এর মধ্যে ৫টি ছক্কা আবার শেষ ওভারে মেরেছেন তিনি। শ্রীলঙ্কার হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন তুশারা।
১৭০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে লঙ্কানদের শুরুটা ছিল মাঝারি মানের। পাওয়ারপ্লেতে ৫৩ রান এলেও তারা দুটি উইকেট হারায়। পাথুম নিসাঙ্কা (১২) ও কামিল মিশারা (৩) দ্রুত ফিরে গেলেও এক প্রান্ত আগলে রেখে দারুণ ব্যাটিং করেন কুশল মেন্ডিস। তৃতীয় উইকেটে কুশল পেরেরার সঙ্গে ৪৫ এবং চতুর্থ উইকেটে চারিথ আসালঙ্কার সঙ্গে ২৭ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে রাখেন এই ওপেনার। কুশল পেরেরা ২০ বলে ২৮ রান করেন। ১২ বলে ১৭ রান করে চারিথ আসালঙ্কা বিদায় নেওয়ার পর ম্যাচ জয়ের জন্য শ্রীলঙ্কার ৩১ বলে ৫১ রান দরকার ছিল। কুশল মেন্ডিস একাই সেই চাপ সামলে দলকে জয় এনে দেন। ১০টি চারের সাহায্যে ৫২ বলে ৭৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন তিনি, যার সুবাদে ম্যাচসেরার পুরস্কারও জেতেন। তার বিদায়ের পর ১৩ বলে ২৬ রান করে অপরাজিত থাকেন কামিন্ডু মেন্ডিস, যিনি আসালঙ্কার সঙ্গে মিলে ১৯তম ওভারেই জয় নিশ্চিত করে ফেলেন।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা উভয় দলই এশিয়া কাপের সুপার ফোরে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছে। অন্যদিকে, গ্রুপ পর্বে নিজেদের দুটি ম্যাচেই হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হয়েছে রশিদ খানের আফগানিস্তানকে, যাদের সাথে বাদ পড়েছে হংকং। এক রোমাঞ্চকর সমীকরণ এবং অন্য দলের জয়ের উপর ভর করে টিকে থাকা বাংলাদেশের জন্য এখন সামনে রয়েছে কঠিন চ্যালেঞ্জ। সুপার ফোরে নিজেদের সেরাটা দিয়ে সেই আস্থার প্রতিদান দেওয়ার অপেক্ষায় আছে টাইগাররা।