জুলাই ২২, ২০২৫, ০৪:১০ পিএম
বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে, যখন তিনি আইনি জটিলতায় জড়িয়ে পড়েছিলেন, তখন তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অভিনেতা চাঙ্কি পান্ডের ভাই, বিশিষ্ট শিল্পপতি চিক্কি পান্ডে। ১৯৯৪ সালে এক সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে শাহরুখ যখন গ্রেফতার হন, তখন চিক্কি পান্ডেই তাকে জামিনে মুক্ত করানোর ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করেন। এই ঘটনা বলিউডের ঝলমলে পর্দার পেছনে থাকা ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব এবং অদৃশ্য সম্পর্কের গভীরতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
চিক্কি পান্ডে শুধু চাঙ্কি পান্ডের ভাই বা অক্ষরা ফাউন্ডেশন অব আর্টস অ্যান্ড লার্নিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবেই পরিচিত নন, তিনি আশির দশকের শেষভাগ ও নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে যখন চাঙ্কি হিন্দি চলচ্চিত্র জগতে একজন তারকা হয়ে ওঠেন, তখন তিনি নিজেও একজন বিশিষ্ট শিল্পপতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি ছিলেন স্টিল কনজিউমার কাউন্সিলের সদস্য এবং যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের টেলিফোন উপদেষ্টা কমিটিরও সদস্য। তার পরিচয় কেবল পারিবারিক সম্পর্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং পেশাগত জীবনেও তার একটি স্বতন্ত্র অবস্থান রয়েছে।
আমাদের অনুসন্ধানে জানা গেছে, চিক্কি পান্ডে সমাজের পিছিয়ে পড়া শিশুদের শিক্ষা প্রদানে নিবেদিত একটি অলাভজনক সংস্থা অক্ষরা ফাউন্ডেশন অব আর্টস অ্যান্ড লার্নিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা। এটি তার সামাজিক দায়বদ্ধতার একটি বড় প্রমাণ। তবে, বলিউডের সঙ্গে তার সম্পর্ক অনেক গভীর। তিনি শুধু সোহেল খানের ভালো বন্ধু নন, বরং শাহরুখ খানেরও ভীষণ ঘনিষ্ঠ একজন বন্ধু। এই ঘনিষ্ঠতার সূত্রেই তিনি খান পরিবারের খুব কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত। চিক্কির স্ত্রী ডিন পান্ডে একজন সুপরিচিত লাইফস্টাইল কোচ, যার ক্লায়েন্ট তালিকায় সালমান খান, প্রীতি জিনতা, লারা দত্ত, বিপাশা বসু’র মতো তারকারা রয়েছেন। এটি প্রমাণ করে যে, পান্ডে পরিবার বলিউডের অন্যতম প্রভাবশালী পরিবারগুলোর একটি।
১৯৯৪ সালে এক সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান গ্রেফতার হন। এই কঠিন সময়ে যখন অনেকেই পিছু হটেছিলেন, তখন চিক্কি পান্ডেই শাহরুখের পাশে দাঁড়ান। তিনি নানা পটেকারের সঙ্গে মিলে শাহরুখকে জামিনে মুক্ত করানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এটি কেবল একটি আইনি সহায়তা ছিল না, বরং বন্ধুত্বের এক মজবুত বন্ধনের প্রকাশ ছিল। সূত্র অনুযায়ী, শাহরুখের প্রতি চিক্কির এই সমর্থন তাদের বন্ধুত্বের গভীরতা প্রমাণ করে এবং এটি বলিউডের ইতিহাসে এক স্মরণীয় ঘটনা।
তবে চিক্কির প্রভাব কেবল শাহরুখকে জেল থেকে মুক্ত করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। ২০০৮ সালে শাহরুখ খান ও সালমান খানের মধ্যে যে বড় ধরনের ঝগড়া হয়েছিল, যা বলিউডে দীর্ঘদিনের ফাটল সৃষ্টি করেছিল, সেই সমস্যা মিটমাট করার অন্যতম কাণ্ডারি ছিলেন এই চিক্কি পান্ডে। ২০১৩ সালে বাবা সিদ্দিকীর ইফতার পার্টিতে এই দুই সুপারস্টারকে পাশাপাশি বসিয়ে কথা বলান চিক্কি। তার মধ্যস্থতায় শাহরুখ ও সালমানের মধ্যে সব দূরত্ব মিটে যায় এবং তারা আবার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে ফিরে আসেন। এই ঘটনা বলিউডের ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক পুনর্মিলন হিসেবে বিবেচিত হয়, যার পেছনে চিক্কি পান্ডের অসামান্য অবদান ছিল।
বর্তমানে চিক্কির ছেলে আহান পান্ডেও শাহরুখের ছেলে আরিয়ান খানের ভীষণ ভালো বন্ধু। এটি প্রমাণ করে যে, দুই পরিবারের মধ্যে বন্ধুত্বের এই ধারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে।
আপনার মতামত লিখুন: