শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২

ভারতজুড়ে গণবিক্ষোভে চাপে মোদি সরকার

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ০৮:৪৬ পিএম

ভারতজুড়ে গণবিক্ষোভে চাপে মোদি সরকার

ছবি - সংগৃহীত

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চলমান গণবিক্ষোভ দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারকে ব্যাপক চাপের মুখে ফেলেছে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে যেমন গণবিক্ষোভের কারণে শাসক শক্তির ভিত্তি নড়ে উঠেছে, সেই প্রভাব এখন ভারতেও দৃশ্যমান। মণিপুর, আসাম ও বিহারে নানা ইস্যুতে জনরোষ ক্রমশ জোরালো হচ্ছে, যা বিরোধী দলগুলোকে নতুন করে সংগঠিত হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।

সবচেয়ে বড় সংকট চলছে মণিপুরে, যেখানে গত দুই বছর ধরে চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় আড়াইশোর বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং প্রায় ষাট হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে অনিশ্চিত জীবন কাটাচ্ছেন। গত বছর ফেব্রুয়ারি থেকে সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি রয়েছে।

বিরোধীরা অভিযোগ করছে, মোদি সরকার ইচ্ছে করেই দুই সম্প্রদায়কে আলাদা করে রেখেছে এবং সংকট সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, "মণিপুরে মানুষ মরছে, আর সরকার শুধু ভোটের হিসাব কষছে।" প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যদি একবারের জন্যও মানুষের পাশে দাঁড়াতে না পারেন, তবে সেই সরকার শুধুমাত্র নিজের দলের।

মণিপুরের প্রতিবাদের আগুন এখন আসামেও ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে নাগরিকপঞ্জি ও নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বাংলাভাষী পরিবারগুলোর মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। ছাত্র ও নাগরিক সংগঠনগুলো রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করছে এবং “আমরা ভারতীয়, আমাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া চলবে না” স্লোগান দিচ্ছে। একাধিক মানবাধিকার কর্মী গ্রেফতার হওয়ায় পরিস্থিতি আরও অস্থির হয়েছে।

অন্যদিকে, বিহারেও বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধন ঘিরে গণবিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিরোধীরা এটিকে “ভোট চুরির বৈধ প্রক্রিয়া” বলে আখ্যায়িত করেছে। রাজধানী পাটনা থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত মিছিল ও অবরোধ চলছে। আদালতও ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার বিষয়ে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করতে বলেছে, যা আন্দোলনকারীদের আরও উৎসাহিত করেছে।

তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি অভিযোগ করেছেন, বিজেপি উত্তর-পূর্ব থেকে বিহার পর্যন্ত বিরোধী কণ্ঠরোধ করছে এবং বাংলাভাষীদের ভোটাধিকার কেড়ে নিচ্ছে।এই চলমান বিক্ষোভগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারতের সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে, যা বিজেপি সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।