আগস্ট ১৪, ২০২৫, ১১:১১ এএম
বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন এবং ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। কিন্তু অনেক সময় কৌতুক বা রসিকতার ছলে অনেক তরুণ-তরুণী বিয়ে বা তালাকের মতো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে মজা করে থাকে। প্রশ্ন হলো, যদি দুষ্টুমির ছলে ‘কবুল’ বলে ফেলা হয়, তাহলে কি সেই বিয়ে শরিয়তসম্মতভাবে গণ্য হবে?
সম্প্রতি এক পাঠকের এমন একটি প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রশ্নটি ছিল, এক বন্ধু তার বান্ধবীকে ঠাট্টা করে ‘বিয়ে করলাম’ বলে এবং বান্ধবীও মজা করে ‘কবুল করলাম’ বলে। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক না থাকলেও এখন মেয়েটির অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়েছে। মেয়ের বাবা এখন ওই বন্ধুকে তালাক দিতে বলছেন। কিন্তু ছেলেটি বলছে, এটি কেবল রসিকতা ছিল, তাই তালাকের প্রয়োজন নেই।
ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে, ঠাট্টাচ্ছলে বিয়ে করলে তা বৈধ বিয়ে হিসেবে গণ্য হতে পারে, যদি বিয়ের শর্তগুলো পূরণ হয়। বিয়ের মূল শর্তগুলো হলো: ১. ছেলে ও মেয়ে উভয়ের সুস্পষ্ট সম্মতি। ২. দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে ‘ইজাব-কবুল’ (প্রস্তাব ও সম্মতি) বলা।
এ বিষয়ে তিরমিযী শরীফের একটি হাদিসে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “তিনটি বিষয় এমন, যা স্বাভাবিকভাবে করলেও কার্যকর হয় এবং ঠাট্টাচ্ছলে করলেও কার্যকর হয়। ১. নিকাহ (বিয়ে), ২. তালাক এবং ৩. তালাক (রাজয়ী) দেওয়ার পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়া।” (জামে তিরমিযী, হাদিস ১১৮৪)।
সুতরাং, প্রশ্নে উল্লিখিত ঘটনায় যদি দুজন সাক্ষীর সামনে ঠাট্টাচ্ছলে ‘ইজাব-কবুল’ বলা হয়ে থাকে, তাহলে তাদের বিয়ে হয়ে গেছে। এখন ওই মেয়েটিকে অন্য কোথাও বিয়ে দেওয়ার জন্য অবশ্যই প্রথমে ওই বন্ধুর থেকে তালাক নিতে হবে। তালাক ছাড়া অন্য কোথাও বিয়ে দেওয়া শরিয়তসম্মত হবে না। তবে যেহেতু তাদের মধ্যে নির্জনবাস হয়নি, তাই ইদ্দতের প্রয়োজন নেই। তালাকের পরপরই মেয়েটি অন্যত্র বিয়ে করতে পারবে।
ইসলামী পণ্ডিরা মনে করেন, বিয়ে ও তালাকের মতো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা গুরুতর অন্যায় এবং এর থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য।