আগস্ট ২৭, ২০২৫, ১২:৩৯ পিএম
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) থেকে ভারতের ওপর কার্যকর হয়েছে। রাশিয়া থেকে তেল ও অস্ত্র কেনার কারণে এই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র, যা ছিল ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার, এখন তাদের অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্রের ওপর সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপকারী দেশগুলোর একটিতে পরিণত হলো। বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির জন্য এটি একটি বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই কঠোর শুল্কের প্রতিক্রিয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অর্থনৈতিক চাপ মোকাবিলায় কর কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন এবং দেশীয় উৎপাদন ও স্বনির্ভরতার ওপর জোর দিয়েছেন। সম্প্রতি স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে তিনি জনগণের জন্য বড় অঙ্কের কর ছাড়ের ঘোষণা দেন এবং ছোট ব্যবসায়ীদের দোকানে 'স্বদেশি' বা 'মেড ইন ইন্ডিয়া' পণ্য প্রদর্শনের আহ্বান জানান। মোদি বলেন, “বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক স্বার্থপরতা বাড়ছে, আমরা বসে কাঁদব না, উঠে দাঁড়াব।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই শুল্কের ফলে ভারতের রপ্তানিনির্ভর শিল্পগুলো, যেমন তৈরি পোশাক, রত্ন, গয়না ও সামুদ্রিক খাদ্য - ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং কোটি মানুষের জীবিকা বিপন্ন হতে পারে।
শুল্কের কারণে বাণিজ্য অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও, ভারতের শেয়ারবাজার ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। মোদি সরকার সুদের হার আরও কমানোর এবং পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) কাঠামোকে সহজ করার পরিকল্পনা করছে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, জিএসটির জন্য দুই স্তরের কাঠামো আনার কথা ভাবা হচ্ছে। মার্কিন ব্রোকারেজ ফার্ম জেফরিজ মনে করছে, কর ছাড় এবং জিএসটি হ্রাসের ফলে ভারতের ভোগব্যয় প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার বাড়বে।
বর্তমানে ভারতের প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা ধীর হয়েছে এবং বহির্বাণিজ্যে সংকট এখনো কাটেনি। ট্রাম্পের 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতির অংশ হিসেবে এই শুল্ক কার্যকর হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।