আগস্ট ২৭, ২০২৫, ১০:৫২ এএম
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাতের উত্তাপ নতুন করে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইয়েমেনের হুথি যোদ্ধারা আবারও ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, তারা ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে আকাশেই আটকে দিয়েছে। এই হামলা এমন এক সময়ে ঘটলো যখন গাজায় যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর ইসরাইল নতুন করে সামরিক অভিযান শুরু করেছে।
আল আরাবিয়া সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ইসরাইলের কয়েকটি অঞ্চলে সাইরেন বাজার পরপরই এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলাটি ঘটে। ইসরাইলি সেনারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে এক বার্তায় জানায়, "ইয়েমেন থেকে নিক্ষেপ করা একটি ক্ষেপণাস্ত্র আইএএফ (ইসরাইলি বিমানবাহিনী) আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে আটকে দিয়েছে।" এই হামলাটি ইসরাইল ও হুথিদের মধ্যে চলমান সংঘাতের সর্বশেষ সংযোজন। হুথিরা ফিলিস্তিনে ইসরাইলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে এবং গাজাবাসীর সমর্থনে এই হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেছে।
রিপোর্টারের ভয়েস থেকে জানা গেছে, গাজায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতি চলাকালীন হুথিরা ইসরাইলে তাদের হামলা বন্ধ রেখেছিল। কিন্তু গত মার্চে সেই যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর ইসরাইল যখন গাজায় বড় ধরনের সামরিক অভিযান শুরু করে, তখন হুথিরাও ফের আক্রমণের পথে ফিরে আসে। এর জবাবে ইসরাইলও ইয়েমেনে বেশ কয়েকটি পাল্টা হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় হুথি-নিয়ন্ত্রিত সানার বিমানবন্দর এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তু ছিল। সাম্প্রতিক হামলায় ইয়েমেনের সানায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
এই হামলা-পাল্টা হামলার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সংঘাত শুধুমাত্র ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি একটি আঞ্চলিক সংকটে পরিণত হয়েছে। হুথিদের এই হামলা ইসরাইলের জন্য একটি নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, কারণ তাদের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের বাইরে থেকেও আসছে। এটি ইসরাইলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহল থেকে সংঘাত প্রশমনের আহ্বান জানানো হলেও উভয় পক্ষই তাদের অবস্থান থেকে সরে আসছে না। হুথিরা গাজার ওপর থেকে অবরোধ তুলে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছে, অন্যদিকে ইসরাইল নিজেদের সুরক্ষার কথা বলে তাদের সামরিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এই সংঘাতের ভবিষ্যৎ কী হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়, তবে এটি মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।