বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট, ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২

মৃতের জন্য বিলাপ করলে কবরে আজাব হয় কি?

দিনাজপুর টিভি ডেস্ক

আগস্ট ২১, ২০২৫, ০৭:২০ পিএম

মৃতের জন্য বিলাপ করলে কবরে আজাব হয় কি?

ছবি- সংগৃহীত

মৃত্যু মানব জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য সত্য। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, "প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে" (সুরা আলে ইমরান : ১৮৫)। প্রিয়জনের মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবে কান্না করা মানুষের স্বাভাবিক আবেগ। এটি ইসলামে জায়েজ। কিন্তু বিলাপ করে কান্না করা বা শরিয়তের সীমা লঙ্ঘন করা কি কবরের শাস্তির কারণ হতে পারে? এই বিষয়ে ইসলামি স্কলারদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে।

 শায়াখ আহমাদুল্লাহসহ বেশিরভাগ ইসলামি স্কলারের মতে, প্রিয়জনের বিয়োগে চোখের জল ফেলে কান্না করা স্বাভাবিক এবং এতে কোনো বাধা নেই। স্বয়ং নবীজিও (সা.) তাঁর প্রিয়জনদের মৃত্যুতে কেঁদেছেন। তবে বিলাপ করে কান্না করা, অর্থাৎ উচ্চস্বরে চিৎকার করা, কপাল বা হাত চাপড়ানো এবং জামার বুক ছিঁড়ে ফেলা ইসলামে নিষিদ্ধ। হাদিসে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন, "যারা (মৃত ব্যক্তির জন্য শোক প্রকাশে) গাল চাপড়ায়, জামার বুক ছিঁড়ে ফেলে এবং জাহিলিয়াত যুগের মতো চিৎকার দেয়, তারা আমাদের তরিকাভুক্ত নয়।" (বোখারি: ১২১৭)

মৃত ব্যক্তির জন্য বিলাপের কারণে তার কবরে আজাব হবে কি না, এই প্রশ্নে ইসলামি স্কলারদের মধ্যে দুটি মত রয়েছে। সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মাদরাসা জামিয়া কৌড়িয়ার প্রধান মুফতি মাওলানা হেলাল আসহাব কাসেমি বলেন, যদি মৃত ব্যক্তি জীবদ্দশায় জানতেন যে তার মৃত্যুর পর স্বজনরা বিলাপ করবেন এবং তিনি তাদের নিষেধ না করেন বা এমনটা পছন্দ করেন, তবে এর জন্য তাকে কবরে শাস্তি দেওয়া হবে। অন্যথায়, শুধু বিলাপকারীকে শাস্তি দেওয়া হবে, মৃত ব্যক্তিকে নয়।

 ইসলাম মানুষকে যেকোনো বিপদ-আপদে ধৈর্য ধারণের শিক্ষা দেয়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।" (সুরা বাকারা : ১৫৩)। যেকোনো বিপদ বা কষ্টে ধৈর্য ধারণ করলে আল্লাহ গোনাহ মাফ করে দেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মুসলিম ব্যক্তির ওপর যেসব কষ্ট আপতিত হয়, তার দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেন। (বোখারি : ৫২৩৯)